ফিতরা বা সাদাকাতুল ফিতর ঈদুল ফিতরের পূর্বে আদায় করা এক বিশেষ দান। যা রমজানের শেষ সময়ে মুসলমানদের জন্য ওয়াজিব করা হয়েছে। এটি একদিকে যেমন রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করে। তেমনি গরিব-দুঃখীদের ঈদের আনন্দে শামিল করতেও সহায়তা করে।
ফিতরা কত টাকা ২০২৫
এ বছর ফিতরার ন্যূনতম পরিমাণ ১১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২,৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী, নিম্নলিখিত খাদ্যদ্রব্য বা এর বাজার মূল্য দিয়ে ফিতরা প্রদান করা যায়—
খাদ্যদ্রব্য | পরিমাণ | বাজার মূল্য (টাকা) |
---|---|---|
গম বা আটা | ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম | ১১০ |
যব | ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম | ৫৩০ |
খেজুর | ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম | ২,৩১০ |
কিসমিস | ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম | ১,৯৮০ |
পনির | ৩ কেজি ৩০০ গ্রাম | ২,৮০৫ |
সর্বনিম্ন ফিতরা দেওয়াই কি যথেষ্ট?
অনেকেই সর্বনিম্ন ফিতরা প্রদান করেই দায়িত্ব শেষ মনে করেন। কিন্তু ইসলামে সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোত্তমটি দান করাকে উৎসাহিত করা হয়েছে। তাই যার সামর্থ্য রয়েছে, তার উচিৎ খেজুর, কিসমিস বা পনিরের মূল্যের সমপরিমাণ ফিতরা প্রদান করা।
ফিতরা কাকে দেওয়া যাবে?
ফিতরা শুধুমাত্র যাকাত পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের দেওয়া যায়। যাদের নিজস্ব প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদ নেই, তারা ফিতরার হকদার। তবে, নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের ফিতরা দেওয়া যায় না—
✅ নিজের বাবা-মা, দাদা-দাদি, নানা-নানি
✅ নিজের সন্তান, নাতি-নাতনি
✅ নিজের স্ত্রী (কারণ, তার ভরণপোষণের দায়িত্ব স্বামীর)
✅ ধনী ব্যক্তি ও নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী
✅ অমুসলিম ব্যক্তি
ফিতরা দেওয়ার সঠিক সময়
ফিতরা আদায় করার উত্তম সময় ঈদের নামাজের আগে। তবে, কেউ চাইলে রমজানের শুরু থেকে ঈদের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত ফিতরা প্রদান করতে পারেন।
ফিতরা কেন দেওয়া হয়?
ফিতরার মূল উদ্দেশ্য হলো—
✔ রোজার ত্রুটি-বিচ্যুতি পূরণ করা
✔ দরিদ্রদের ঈদের আনন্দে শামিল করা
✔ সমাজে ধনী-গরিবের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করা
কিসমিস কি ফিতরা হিসেবে দেওয়া যাবে?
হ্যাঁ, কিসমিস ফিতরার জন্য অনুমোদিত খাদ্যদ্রব্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। ইসলামের বিধান অনুযায়ী, গম, যব, খেজুর, কিসমিস ও পনির দ্বারা ফিতরা আদায় করা যায়। যদি কেউ খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে টাকা দিতে চান, তবে তার মূল্য হিসেব করে দিতে হবে।
সদকাতুল ফিতরের পরিমাণ কত
প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারীর জন্য ফিতরা আদায় করা ওয়াজিব। নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে ফিতরা আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করা উত্তম। তবে, রমজানের শুরু থেকে ঈদের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত ফিতরা আদায় করা যায়। যাকাত পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের ফিতরা দেওয়া যায়। সাধারণত গরিব-দুঃখী, অভাবী ও অসহায়দের ফিতরা দেওয়া হয়। ফিতরা কত টাকা ২০২৫ ইসলামিক ফাউন্ডেশন-
শেষ কথা
ফিতরা কেবল একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি সমাজের দারিদ্র্য বিমোচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। তাই, আমাদের উচিৎ যথাযথভাবে ও সময়মতো ফিতরা প্রদান করা। যেন সমাজের প্রত্যেক দরিদ্র মানুষ ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে।