শবে মেরাজ হলো ইসলামের ইতিহাসে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও রহস্যময় ঘটনা। ৬২১ সালের রজব মাসের ২৭ তারিখে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। এই রাতে আল্লাহ তায়ালা হজরত মুহাম্মদ (সাঃ)-কে জিবরাইল (আঃ)-এর সাহায্যে ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেছিলেন। হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) কাবা ঘরের পাশে মসজিদে হারাম-এ ঘুমিয়ে ছিলেন। জিবরাইল (আঃ) তাকে বোরাক নামক এক অলৌকিক বাহনে করে মসজিদুল আকসা-য় নিয়ে যান। সেখান থেকে সপ্তম আসমান, সিদরাতুল মুনতাহা, লাওহে মাহফুজ, জান্নাত, জাহান্নাম সহ আরও অনেক স্থান পরিদর্শন করেন। আল্লাহ তায়ালার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং ৫০ ওয়াক্ত নামাজের ফরজিয়ত লাভ করেন। পৃথিবীতে ফিরে এসে তিনি সাহাবাদের কাছে এই ঘটনার বর্ণনা করেন।
মেরাজ হলো আল্লাহ তায়ালার নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ ও মর্যাদার প্রতীক। এটি নবীর রিসালাতের সত্যতার প্রমাণ। আল্লাহর অস্তিত্ব, একত্ব, ক্ষমতা ও জ্ঞানের প্রমাণ। পারকালিক জীবনের বাস্তবতার প্রমাণ। মুসলমানদের ঈমান ও আখেরাতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির মাধ্যম। তাই রাতে সকল মুসলমান ইবাদত করার জন্য অনেক আগ্রহী হয়ে থাকেন। আরবি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আরবি দিনের শুরু গণনা করা হয় ইংরেজি ক্যালেন্ডারের সন্ধ্যা সময় থেকে। অর্থাৎ প্রত্যেকদিন মাগরিবের ওয়াক্ত থেকে আরবি দিনের শুরু। তাই অনেকেই অনুসন্ধান করেছেন এই বছর শবে মেরাজ কত তারিখে পালন করা হবে। আপনাদের সবার সুবিধার্থে ইসলামিক ফাউন্ডেশন চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে। ৮ ফেব্রুয়ারি রোজ বৃহস্পতিবার শবে মেরাজ পালনের দিন ঠিক করেছে।
শবে মেরাজ কত তারিখে ২০২৪
প্রত্যেক বছর রজব মাসের ২৭ তারিখ পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হয়। সেই হিসেবে ২০১৪ সালের রজব মাসের ২৭ তারিখ পড়েছে ফেব্রুয়ারি ৮ তারিখ। অর্থাৎ রোজ বৃহস্পতিবার পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হবে পুরো বাংলাদেশ। অন্যদিকে সৌদি সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ৭ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ রোজ বুধবার শবে মেরাজ পালিত হবে।
আজকে কি শবে মেরাজ
আজকে যদি রজব মাসের ২৭ তারিখ হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই আজকে শবে মেরাজ। প্রত্যেক বছর রজব মাসের ২৭ তারিখ সবে মেরাজ উদযাপন করা হয়। এই দিনটি সকল মুসলিমের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনাদের সুবিধার্থে জানাতে চাই, এই বছর ফেব্রুয়ারি মাসের ৮ তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে মেরাজ পালন করা হবে। আশা করি আপনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন অন্যকে জানতে সাহায্য করুন।
শবে মেরাজের নামাজের নিয়ত ও শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আমাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে শবে মেরাজের রোজা কয়টি সহ আরবি নিয়ত ও বাংলা নিয়ত দেওয়া হয়েছে। শবে মেরাজের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
শবে মেরাজের গুরুত্ব
প্রত্যেক মুসলমানের জন্য শবে মেরাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। তারা অসংখ্য মুসলিম এই রাতে নফল ইবাদত করে থাকে। আপনাদের সুবিধার্থে এখানে শবে মেরাজের গুরুত্ব নিয়ে কয়েকটি পয়েন্ট শেয়ার করা হয়েছে।
- মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ আধ্যাত্মিক রাত।
- এই রাতে রোজা রাখা, নামাজ পড়া, তেলাওয়াত করা ও দান-ধ্যান করার অনেক ফজিলত রয়েছে।
- মুসলমানদের ঈমান ও নৈতিকতার উন্নয়নের জন্য এই রাতের ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।
মেরাজের রাতের কিছু বিশেষ আমল
আপনি যদি শবে মেরাজ উপলক্ষে রাতে বিশেষ আমল করতে চান। তাহলে নিচে উল্লেখিত শবে মেরাজের বিভিন্ন আমল দেয়া হয়েছে। তাই বেশি থেকে বেশি নফল ইবাদত করার চেষ্টা করুন এই রাতে।
- নফল নামাজ: ১২ রাকাত নফল নামাজ, ৮ রাকাত ‘শবে মেরাজের নামাজ’
- তাওবা ও ইস্তেগফার: আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
- দান-ধ্যান: দরিদ্রদের সাহায্য করা।
- কুরআন তেলাওয়াত: পবিত্র কুরআন পাঠ করা।
- জিকির-আযকার: আল্লাহর নাম স্মরণ করা।
মেরাজের রাত মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ আধ্যাত্মিক রাত। এই রাতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা, নামাজ-রোজা, দান-ধ্যান এবং কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করা উচিত।
আরও দেখুনঃ