দীর্ঘ এক বছর পর আবারও এসেছে পবিত্র মাহে রমজান মাস। যা সকল মুসলমানের কাছে অন্যতম ফজিলত এর মাস। এই মাসে সকল মুসলমান ৩০ টি ফরজ রোজা পালন করে থাকে। অন্যদিকে রমজানের আরেকটি ফজিলত পূর্ণ ইবাদত হচ্ছে শবে কদরের রাতের ইবাদত। রমজান মাসের শেষ দশ রোজার বিজোর রাত্রি গুলো তে শবে কদরের রাত খুঁজতে বলা হয়েছে। তাই উক্ত রাতে সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান আলাদাভাবে শবে কদরের জন্য ইবাদত পালন করে থাকে। শবে কদরের রাতের বিভিন্ন হাদিস ও ফজিলত রয়েছে। তাই আপনাদের জন্য শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম আজকের পোস্টে শেয়ার করা হয়েছে।
শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম
নারী ও পুরুষ সকলেই শবে কদরের রাত অনুসন্ধান করে। তাই আপনি যদি এই পবিত্র রমজান মাসে শবে কদরের রাত খুঁজতে চান। তাহলে আপনাকে জানতে হবে শবে কদরের জন্য কিভাবে নামাজ পড়তে হবে। শবে কদরের নামাজ কোন সূরা দিয়ে পড়তে হয় ও শবে কদরের নামাজের নিয়ত শিখতে হবে। তাই আপনাদের সবার সুবিধার্থে শবে কদরের নামাজের বিস্তারিত সকল তথ্য ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হয়েছে।
শবে কদরের নামাজের নিয়ত:
এখানে দেখুন শবে কদর নামাজের আরবি নিয়তঃ নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকআতাই সালাতিল লাইলাতিল কাদ্রি নফ্লে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি.
শবে কদরের নামাজের বাংলা নিয়তঃ আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য শবে কদরের দুই রাকআত নফল নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবর।
শবে কদরের নামাজের নিয়ম
- শবে কদরের রাতে বিশেষ কোন নামাজের নিয়ম বা পদ্ধতি নেই।
- দুই রাকাত করে যত সুন্দর ও মনোযোগ সহকারে পড়া যায় ততই ভালো।
- দুই রাকাত, দুই রাকাত করে আপনি যত খুশি পড়তে পারবেন।
- নামাজের শুরুতে শবে কদরের নামাজের নিয়ত করতে হবে।
- নিয়ত শেষে হাত বাধার পর, ছানা পড়তে হবে
- এখন সূরা ফাতিহা পাঠ করুন ও পবিত্র কুরআনের অন্য যে কোন সূরা পড়ুন
- রুকু করুন ও সেজদা করুন, এভাবে প্রথম রাকাত শেষ করুন
- দ্বিতীয় রাকাত একই ভাবে পড়ুন, তবে সুরা ফাতিহার সাথে অন্য সূরা মিলাবেন
- এখন আত্তাহিয়াতু, দরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে, সালাম ফিরান।
- নামাজের পর দীর্ঘ দোয়া পড়বেন।
মহিলাদের শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম
আপনারা অনেকেই মনে করেন শবে কদরের নামাজ মহিলাদের জন্য আলাদাভাবে পড়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু আসল বিষয় হচ্ছে মহিলা ও পুরুষদের শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম একই। তাই উপরে উল্লেখিত শবে কদরের নামাজের নিয়ম অনুসরণ করে মহিলারা নামাজ পড়বেন। দুই রাকাত করে যত খুশি ফজরের আগ পর্যন্ত পড়তে পারবেন। তবে অবশ্যই নামাজের মাঝে মাঝে বেশি বেশি জিকির করবেন ও আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন।
শবে কদরের রাতে আরও কিছু আমল
- আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করবেন।
- দোয়া পড়বেন, ইস্তেগফার পড়বেন ও তওবা করবেন।
- রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাবেন।
- আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও মুক্তির জন্য প্রার্থনা করবেন।
শবে কদরের রাতের ফজিলত
- শবে কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।
- এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও বরকত বর্ষিত হয়।
- এই রাতে পাপের মাগফিরাত হয় এবং নতুন ভাগ্য লিখিত হয়।
- যে ব্যক্তি এই রাতের ইবাদতে লিপ্ত থাকে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।
শবে কদরের রাত কখন?
শবে কদরের নির্দিষ্ট কোন তারিখ নেই। রমজান মাসের শেষ ১০ দিনের যেকোনো বিজোড় রাতে এটি হতে পারে।
শবে কদর সম্পর্কে কিছু টিপস
- রমজানের শেষ ১০ দিন রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটানোর চেষ্টা করুন।
- শবে কদরের রাতের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতি নিন।
- এই রাতে বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার পড়ুন।
- আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও মুক্তির জন্য প্রার্থনা করুন।
আশা করি এই তথ্য আপনার জন্য সহায়ক হবে। সবাইকে শেয়ার করে শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম জানতে সাহায্য করুন।