পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম ও সিরাপ

গরম বা শীতকালে আমাদের মাঝে অনেকের পায়খানা কষার প্রবণতা দেখা দেয়। আপনি যদি এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। তাহলে আজকের পর থেকে জেনে নিন কিভাবে পায়খানা ক্লিয়ার করবেন। অনেকেই অভিযোগ করে ঠিকমতো পায়খানা ক্লিয়ার হয়না বা …

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম

গরম বা শীতকালে আমাদের মাঝে অনেকের পায়খানা কষার প্রবণতা দেখা দেয়। আপনি যদি এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। তাহলে আজকের পর থেকে জেনে নিন কিভাবে পায়খানা ক্লিয়ার করবেন। অনেকেই অভিযোগ করে ঠিকমতো পায়খানা ক্লিয়ার হয়না বা পায়খানা অনেক কষা। কিন্তু কিভাবে পায়খানা ক্লিয়ার করবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানেনা। তাদের জন্য আজকের এই পোস্টে দারুন কিছু ঘরোয়া নিয়ম ও ট্যাবলেটের নাম দেওয়া হয়েছে। যেগুলো সেবন করলে আপনি খুব দ্রুত পায়খানা ক্লিয়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম বিভিন্ন রকম হতে পারে। বাংলাদেশে প্রচলিত কিছু নাম হল:

  • ইসবগুলের ভুসি ট্যাবলেট
  • ল্যাকটুলোজ ট্যাবলেট
  • সোডিয়াম পিকোসুলফেট ট্যাবলেট
  • সেনা ট্যাবলেট

এই ট্যাবলেটগুলো বিভিন্নভাবে কাজ করে পায়খানা নরম করে। ইসবগুলের ভুসি ট্যাবলেট পানি শোষণ করে মলের আয়তন বাড়ায় এবং মলকে নরম করে তোলে। ল্যাকটুলোজ ট্যাবলেট বৃহদান্ত্রে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা বিপাকিত হয়ে গ্যাস উৎপাদন করে এবং মলকে নরম করে তোলে। সোডিয়াম পিকোসুলফেট ট্যাবলেট পাকস্থলী এবং অন্ত্রের রস দিয়ে বিক্রিয়া করে মলকে নরম করে তোলে। সেনা ট্যাবলেট বৃহদান্ত্রের পেশীকে সংকোচন করে মলকে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।

কোন ট্যাবলেটটি আপনার জন্য উপযুক্ত তা নির্ভর করে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের ধরন এবং তীব্রতার উপর। তাই কোন ট্যাবলেট সেবন করবেন তা নির্ধারণের জন্য। অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

এছাড়াও, পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য কিছু প্রাকৃতিক উপায়ও রয়েছে। যেমন:

  • প্রচুর পরিমাণে তরল পান করা
  • আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা

এই উপায়গুলো অনুসরণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা এবং উপশম করা সম্ভব।

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম বিভিন্ন রকম হতে পারে। বাংলাদেশে সাধারণত ব্যবহৃত কিছু ট্যাবলেট হল:

  • ল্যাকটুলোজ (Lactulose): এটি একটি অ-শোষী ল্যাক্সেটিভ যা পাকস্থলীতে ফুলে যায় এবং মলকে নরম করে তোলে। এটি দিনে এক থেকে তিনবার খাওয়া যেতে পারে।
  • সেনা (Senna): এটি একটি উদ্ভিদ-ভিত্তিক ল্যাক্সেটিভ যা মলত্যাগকে উদ্দীপিত করে। এটি দিনে এক থেকে দুইবার খাওয়া যেতে পারে।
  • বিসাকোডিল (Bisacodyl): এটি একটি ল্যাক্সেটিভ যা মলত্যাগকে উদ্দীপিত করে। এটি দিনে এক থেকে দুইবার খাওয়া যেতে পারে।
  • গ্লিসারিন সাপোজিটরি (Glycerin Suppository): এটি একটি মলত্যাগকে সহজতর করার জন্য মলদ্বারে প্রবেশ করানো হয়।

এছাড়াও, পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ওষুধও পাওয়া যায়। কোন ট্যাবলেটটি আপনার জন্য উপযুক্ত তা আপনার ডাক্তার বা অন্য কোনও স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে পরামর্শ করে নির্ধারণ করা উচিত। আপনি যদি বাংলাদেশে থাকেন। তাহলে আপনি আপনার স্থানীয় ফার্মেসিতে এই ট্যাবলেটগুলি কিনতে পারেন।

কি খেলে পায়খানা হবে

অনেকেই প্রশ্ন করেন পায়খানা ক্লিয়ার না হলে কি হয়?। আপনার যদি নিয়মিত পায়খানা ক্লিয়ার না হয়। তাহলে আপনি কষ্টকাঠিন্য সমস্যায় ভুগতে পারেন। দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে আপনার হতে পারে পাইলস্ সহ আরো নানান ধরনের রোগ। তাই সময় থাকতে পায়খানা নরম করার ওষুধ সেবন করুন। অন্যদিকে ওষুধ সেবন না করে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে খুব সহজেই পায়খানা ক্লিয়ার করতে পারবেন।

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সাধারণত হালকা হয় এবং স্বল্পস্থায়ী হয়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে।

ল্যাকটুলোজ এবং সাইলিয়াম হসসিদার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল:

  • বমি বমি ভাব
  • বমি
  • পেট ফাঁপা
  • গ্যাস
  • ডায়রিয়া

সেনার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল:

  • বমি বমি ভাব
  • বমি
  • পেট ফাঁপা
  • গ্যাস
  • ডায়রিয়া
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • শরীরে পানিশূন্যতা
  • হার্টবিট বাড়ানো
  • হাইপোক্যালেমিয়া (রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা কমে যাওয়া)
  • বিফিডোবাক্টেরিয়ম বিফিডাম এবং ল্যাকটোব্যাসিলাস অ্যাসিডোফিলামের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই কম।

ল্যাকটুলোজ এবং সাইলিয়াম হসসিদা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য নিরাপদ বলে মনে করা হয়। তবে, সেনা সাধারণত দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা হয় না। আপনি যদি পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট গ্রহণ করার সময় কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

এখানে কিছু টিপস রয়েছে যা পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট গ্রহণ করার সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতে সাহায্য করতে পারে:

  • ট্যাবলেটটি খাবারের সাথে বা খাবারের পরে খান।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
  • ট্যাবলেট গ্রহণের পরপরই প্রচুর পরিমাণে তরল পান করবেন না।

যদি আপনি গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী হন। তবে পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট গ্রহণ করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

পায়খানা ক্লিয়ার করার ব্যায়াম

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা যা শরীরের বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেক ওষুধ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও। ব্যায়াম একটি কার্যকরী উপায় হতে পারে। পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য কিছু ব্যায়াম হল:

বর্জ্রাসন

এই ব্যায়ামটি মলত্যাগের প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে। এই ব্যায়ামটি করার জন্য, প্রথমে আপনার পা প্রসারিত করে সোজা হয়ে বসুন। তারপর, আপনার কোমর এবং নিতম্বের পেশীগুলিকে শক্ত করুন। যেন আপনি পায়খানা করার চেষ্টা করছেন। এই অবস্থানটি কয়েক সেকেন্ড ধরে ধরে রাখুন, তারপর শিথিল করুন। এই ব্যায়ামটি প্রতিদিন কয়েকবার করুন।

  • পাইলেটসপাইলেটস ব্যায়ামগুলি কোমর এবং পেটের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। শক্তিশালী পেশীগুলি পায়খানা বের করে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় চাপ তৈরি করতে সাহায্য করে। পাইলেটস ব্যায়ামগুলির মধ্যে রয়েছে:
  1. কাঁধের স্কোয়াট
  2. কাঁধের রিভার্স স্কোয়াট
  3. কাঁধের ক্লিন
  4. প্লাঙ্ক
  5. হাঁটা

নিয়মিত হাঁটা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। হাঁটা পাচনতন্ত্রকে সচল রাখতে সাহায্য করে। যা মলকে নরম করতে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। প্রতিদিন কমপক্ষে 30 মিনিটের জন্য হাঁটার চেষ্টা করুন।

  • জলপান

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। পানি মলকে নরম করতে সাহায্য করে। যা মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। প্রতিদিন 8-10 গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।

এই ব্যায়ামগুলি নিয়মিত করার মাধ্যমে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এটা আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারেন।

পায়খানা ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায়

পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য অনেক ঘরোয়া উপায় রয়েছে। এই উপায়গুলি সাধারণত নিরাপদ এবং কার্যকর, এবং সেগুলি ব্যবহার করা সহজ।

এখানে কিছু জনপ্রিয় ঘরোয়া উপায় রয়েছে:

আপনার ডায়েটে ফাইবার যোগ করুন। ফাইবার মলকে নরম করতে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ফল, যেমন আপেল, কলা, বেল, এবং পেঁপে
  • শাকসবজি, যেমন পালং শাক, ব্রকলি, এবং ব্রকলি
  • গোটা শস্য, যেমন ওটমিল, ব্রাউন রাইস, এবং বার্লি
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি মলকে নরম করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন 8-10 গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম পাচনতন্ত্রকে সচল রাখতে সাহায্য করে, যা মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। প্রতিদিন কমপক্ষে 30 মিনিটের জন্য হাঁটার চেষ্টা করুন।
  • ইসবগুলের ভুসি ব্যবহার করুন। ইসবগুলের ভুসি একটি প্রাকৃতিক ফাইবার যা মলকে নরম করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক বা দুই চা চামচ ইসবগুলের ভুসি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খান।
  • অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন। অ্যালোভেরা জেল মলকে নরম করতে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। প্রতিদিন এক বা দুই চা চামচ অ্যালোভেরা জেল খান।
  • অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করুন। অ্যাপল সাইডার ভিনেগার পাচনতন্ত্রকে সচল রাখতে সাহায্য করে। যা মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে পান করুন।

এই ঘরোয়া উপায়গুলি যদি আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে না রাখে। তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

পায়খানা নরম করার সিরাপ

পায়খানা নরম করার সিরাপ হল এমন একটি ওষুধ যা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। এই সিরাপগুলি সাধারণত মলকে নরম করতে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে।

পায়খানা নরম করার সিরাপের বিভিন্ন ধরন রয়েছে। কিছু সাধারণ ধরন হল:

ল্যাকটুলোজ

ল্যাকটুলোজ একটি কৃত্রিম চিনি যা মলকে নরম করতে সাহায্য করে। এটি খাদ্যের মাধ্যমে শোষিত হয় না। তাই এটি পরিপাকতন্ত্রে পৌঁছে মলের পরিমাণ বাড়ায় এবং মলকে নরম করে তোলে। ল্যাকটুলোজ সাধারণত প্রতিদিন এক থেকে তিনবার খাওয়া হয়।

সেনা

সেনা একটি প্রাকৃতিক উদ্ভিদ যা মলকে নরম করতে সাহায্য করে। এটি মলত্যাগের প্রতিক্রিয়া বৃদ্ধি করে এবং মলকে নরম করে তোলে। সেনা সাধারণত প্রতিদিন এক থেকে তিনবার খাওয়া হয়।

সাইলিয়াম হসসিদা

সাইলিয়াম হসসিদা একটি প্রাকৃতিক ফাইবার যা পায়খানা আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। এটি মলত্যাগ সহজ করে তোলে। সাইলিয়াম হসসিদা সাধারণত প্রতিদিন এক থেকে তিনবার খাওয়া হয়।

পায়খানা নরম করার সিরাপ ব্যবহারের আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। বিশেষ করে, যদি আপনি গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী হন। তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

পায়খানা নরম করার সিরাপের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • বমি বমি ভাব
  • বমি
  • পেট ফাঁপা
  • গ্যাস
  • ডায়রিয়া

যদি আপনি পায়খানা নরম করার সিরাপ গ্রহণ করার সময় কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

আরও দেখুনঃ

কাশির ঔষধ ও সিরাপ এর নাম | কাশির এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম

ফর্সা হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম | খাওয়ার নিয়ম, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও দাম

কৃমির ঔষধের নাম | কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম

Leave a Comment