পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় ও ঔষধের নাম ২০২৪

আমাদের মা-বোনদের নানা ধরনের শারীরিক জটিলাতার সম্মুখীন হতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো মাসিক বা পিরিয়ড। আজকে আমাদের টপিকটা হচ্ছে পিরিয়ড নিয়ে। মাসিক হলে কি করণীয়, মাসিকের ব্যথা দূর করার উপায়। মাসিকের ব্যথার চিকিৎসা। ঘরোয়া …

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় ও ঔষধের নাম

আমাদের মা-বোনদের নানা ধরনের শারীরিক জটিলাতার সম্মুখীন হতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো মাসিক বা পিরিয়ড। আজকে আমাদের টপিকটা হচ্ছে পিরিয়ড নিয়ে। মাসিক হলে কি করণীয়, মাসিকের ব্যথা দূর করার উপায়। মাসিকের ব্যথার চিকিৎসা। ঘরোয়া পদ্ধতিতে মাসিকের ব্যথা দূর করার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো আজকের ব্লগটিতে।

মাসিক কি বা মাসিক কেন হয়

বয়সন্ধিকালে একজন নারীর ডিম্বাশয় এর ভেতর প্রায় তিন থেকে চার লাখের মতো অর্ধ প্রস্তুত ও অনিষিক্ত ডিম্বানু থাকে। যোনি পথ দিয়ে অপ্রয়োজনীয় অনিষিক্ত ডিম্বাণু র*ক্তের সাথে বের হয়ে আসাকে মাসিক বলা হয়। মাসিকের সময় একজন নারীর দেহ থেকে ৩০-৯০ মি.লি. তরল বের হয়ে যায়। এ সময় নারীদের প্রচুর পেট ব্যথা দেখা দেয়। অপুষ্টি হীনতায় ভুগে অনেক নারী। মাসিক সাধারণত ১০ থেকে ৪৫ বছর বয়স্ক নারীদের হয়ে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মাসিকের ব্যথা কমতে থাকে।

মাসিকের লক্ষণগুলো

প্রত্যেক নারীদেরই মাসিক হয়ে থাকে। মাসিক হলে নারীদের দেহে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন :

  • তলপেট ব্যথা।
  • যো*নি পথে র*ক্তপাত হওয়া।
  • পিঠে ব্যথা।
  • স্তন ব্যথা করা বা ভারী অনুভূতি হওয়া।
  • দুর্বলতা কাজ করা।
  • মন মেজাজ খিটখেটে থাকা।

মাসিকের সময় নারীদের কষ্ট কথা

মাসিক হচ্ছে প্রাকৃতিক নিয়ম। একজন নারীর প্রত্যেকমাসে ২-৭ দিন মাসিক হয়ে থাকে৷ অর্থাত একজন নারীর গড় আয়ুর ৬ বছর মাসিকের যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। মাসিকের সময় নারীদের প্রচুর ব্যাথা অনুভুত হয়। এসব কিছু সহ্য করেও একজান নারীকে নানা ধরনের কথা শুনতে হয়। আমাদের সমাজের কিছু পুরুষেরা সব সবসময় প্রস্তুত থাকেন পিরিয়ডের সময় নারীদের নিয়ে উপহাস করার জন্য। ন্যাপকিন বা প্যাড নিতে গেলে দোকানিও আর চোখে তাকিয়ে প্যাড এমন ভাবে প্যাকিং করে দেয় মনেহয় মেয়েটি কোন মাদকদ্রব্য নিচ্ছে। পুরুষদের উচিত পিরিয়ডের সময় নারীদের পাশে থাকা। নারীদের প্রয়োজনীয় সকল কার্যক্রমের পাশে থাকা।

পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়

মাসিকের ব্যাথা দূর করার কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলু অবলম্বন করলে মাসিকের ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

সেঁক নেওয়াঃ মাসিকের সময় প্রচন্ড পরিমানে তলপেটে ব্যাথা বা পেটে ব্যাথা করে। এজন্য হট ওয়াটার ব্যাগের সাহায্যে বা বোতলে গরম পানি তুলে তোয়ালে বোতলে পেচিয়ে পেটে সেঁক নিতে পারেন। এতে ব্যাথা অনেক কমে যাবে।

আদা: আদা সেবন করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। মাসিকের ব্যাথা হওয়ার আগে থেকে আদা কুচি করে অথবা চায়ের সাথে আদা খেলে মাসিকের ব্যাথা কমে।

গোসল: ব্যথা কমানোর জন্য কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। এতে মাসিকের ব্যথা কমবে শরীরও আরাম লাগবে।

ব্যায়াম: হালকা ব্যায়াম করলে মাসিকের ব্যথা কমে। যেমন: হাটাহাটি করা, সাইকেল চালানো,ইয়োগা করা, যোগ ব্যায়াম করা ইত্যাদি। রেগুলার ব্যায়াম করলে মাসিকের ব্যথা কম হয়।

শ্বাসের ব্যায়াম: যখন আমাদের শরীর কোথাও ব্যথা করে আমরা নিজের অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস নেই ফলে ব্যথা হয়ে যায়। নির্দিষ্ট নিয়মে শ্বাসের ব্যায়াম করলে ব্যথা নিরাময়। সম্ভব সঠিক নিয়ামটি হলো:

প্রথমে পিঠটি কোথাও হেলান দিয়ে নিতে হবে। শুয়ে বা বসে ব্যায়ামটি করা যায়। প্রথমে নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে পেট ফুলাবো তারপর এমন ভাবে শ্বাস ছাড়বো যেন মনেহয় মোমবাতি নিবাচ্ছি। এভাবে ১০-১২ মিনিট ব্যায়াম করলে ব্যথা কমে যাবে।

মাসিকের ব্যথার ঔষধ

মাসিকের ব্যথা দূর করতে কিছু মেডিসিন আছে যেগুলো আপনি ফার্মেস থেকে নিতে পারবেন।

আইবুপ্রোফেন: মাসিকের ব্যথা দূর করার খুবই ভালো মেডিসিন হল আইবুপ্রোফেন। কারণ মাসিকের ব্যথা যে কেমিক্যাল এর জন্য হয় সেই কেমিক্যাল কে থামিয়ে দেয় আইবুপ্রোফেন। ফলে ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে ব্যথা কমে যায়।

খাওয়ার নিয়ম: যাদের বয়স ১২ বছরের বেশি তাদের জন্য ৪০০ মি.গ্রাম ট্যাবলেট দিনে তিন থেকে চারবার।

সতর্কতা : খালি পেটে ওষুধ খাওয়া যাবে না। যাদের হার্টের সমস্যা আছে, কিডনিতে সমস্যা আছে তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিতে পারবেন।

প্যারাসিটামল: যাদের বয়স ১৬ বা তার বেশি তারা ৫০০ মিলিগ্রাম ১০০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট খেতে পারবেন। ৫০০মি.গ্রাম হলে একটি বা দুটি ট্যাবলেট খেতে পারবেন। খেয়াল রাখতে হবে যেন ৮ ট্যাবলেটের বেশি না খাওয়া হয়।

মাসিকের স্বাভাবিক ব্যথা

মাসিকের সময় কম বেশি ব্যথা হওয়াই স্বাভাবিক। স্বাভাবিক ব্যথা মাসিক শুরু হওয়ার সময় বা কয়েক ঘণ্টা আগেও ব্যথা শুরু হতে পারে। ৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যথা থাকতে পারে। তলপেট ব্যথা, পিঠ ব্যাথা উরুর ভেতরের দিকে ব্যথা এগুলো স্বাভাবিক ব্যথা।

অস্বাভাবিক ব্যথা: যে ব্যথাগুলো রোগের জন্য হয় তা মাসিক শুরু হওয়ার বেশ কয়েক বছর পর থেকে শুরু হয়। ব্যথা খুবই তীব্র হতে পারে অর্থাৎ স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছে না এমন ব্যথা। তাছাড়া মাসিকের সাথে অনেক র*ক্ত যাওয়া বড় বড় চাকা যাওয়া,মাসিক অনিয়মিত, মি*লনের সময় ব্যথা সাদাস্রাব হওয়া এগুলো অস্বাভাবিক ব্যথা। এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে ভালো কোন গাইনোকোলজিস্ট দেখাতে হবে।

আশা করি উপরের পোস্টটি পড়ে মা বোনদের অনেক উপকার হবে। এাজন পুরুষ হিসেবে আপনার দ্বায়িত্ব মাসিকের সময় আপনার বাসার নারীদের প্রতি যত্নবান হওয়া। পোস্টটি পড়ে কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন, ধন্যবাদ।

আরও দেখুনঃ

কৃমির ঔষধের নাম | কৃমির ঔষধ খাওয়ার নিয়ম

কাশির ঔষধ ও সিরাপ এর নাম | কাশির এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট এর নাম

টনসিল এর ঔষধ | গলা ব্যাথার ঔষধের নাম ও ঘরোয়া চিকিৎসা

Leave a Comment